০২:৫০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিপুল টাকার ঘুষ নিয়ে দায়িত্ব হস্তান্তরের পূর্বে অবৈধভাবে পদোন্নতির প্রস্তাব পাঠালেন শামীম আখতার!

নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা
  • আপডেট সময় : ১১:২৫:০৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫ ৭৪ বার পড়া হয়েছে

গণপূর্ত ইএম অংশের তিনজন প্রকৌশলীকে অবৈধভাবে বিধিবহির্ভুত পদোন্নতির প্রস্তাব পাঠিয়েছেন সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. শামীম আখতার।

জানা যায়, গণপূর্ত ইএম উইংয়ে বিগত স্বৈরাচার সরকারের আমলে শেখ হেলাল এবং শেখ সেলিমের হস্তক্ষেপে এবং স্বয়ং শেখ হাসিনার মৌখিক আদেশে কোন প্রিলি কিংবা লিখিত পরীক্ষা ছাড়াই শুধুমাত্র ভাইভা পরীক্ষার মাধ্যমে উচ্চতর পদে নিয়োগ পান ছাত্রলীগের ১১ প্রকৌশলী। তাও আবার উচ্চতর ষষ্ঠ গ্রেডে।

এ নিয়োগের বিরুদ্ধে বিসিএস প্রকৌশলীগণ উচ্চতর আদালতে রীট পিটিশন মামলা করলে তাদেরকে প্রশাসনিকভাবে হয়রানি করা হয়।

এমনকি বিচারপতিদেরকে ফোন করে উচ্চতর পদে নিয়োগ দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন শেখ সেলিম। এক্ষেত্রে শেখ হাসিনার রেফারেন্স দেন তিনি।

অবশেষে দীর্ঘ শুনানি শেষে বিসিএসে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের পদ সংরক্ষণ করে উচ্চতর পদে নিয়োগের রায় দেন আদালত।

আদালতের সে রায়কেও বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে উচ্চতরপদে নিয়োগপ্রাপ্ত ছাত্রলীগের ১১ জনকে দেয়া হয় জেষ্ঠ্যতা। ফলে বিসিএস কর্মকর্তাদের মধ্যে পুঞ্জীভূত ক্ষোভ মহীরুহ রূপ ধারণ করে।

স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর বিসিএস কর্মকর্তাগণ পুনরায় আদালতের দ্বারস্থ হন। উচ্চতর আদালতের শুনানি নানা অজুহাতে পিছিয়ে নিয়ে সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. শামীম আখতারকে ঘুষ দিয়ে গত ২৬ অক্টোবর, ২৫ তারিখে ব্যাকডেটে সাইন দিয়ে পদোন্নতির প্রস্তাব তারা হাতে হাতে নিয়ে যায় ২৮ অক্টোবর ,২৫ তারিখে।গত ২৮ অক্টোবর,২৫ তারিখ দায়িত্ব হস্তান্তরের ১ ঘন্টা পূর্বে তিনি এই ফাইল ব্যাকডেটে সাইন করেন।

চাকরিবিধির জেষ্ঠ্যতা বিধিমালার বিধি ৮ এর উপবিধি ২ অনুযায়ী কোন কর্মকর্তা সিনিয়র স্কেল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হলে এবং বিভাগীয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হলে কিংবা অকৃতকার্য হলে তিনি সর্বোচ্চ ৪৩০০০-৬৯৫০০/- টাকার বেতন স্কেল তথা পঞ্চম গ্রেডে উত্তীর্ণ হতে পারবেন। কিন্তু এরপরে তিনি কোন উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্য হবেন না।

রীতিমত সরকারি এই চাকরিবিধি ভঙ্গ করে এবং আদালতে বিচারাধীন বিষয়ে আদালতের মতামতকে থোড়াই কেয়ার করে ঘুষ গ্রহণের মাধ্যমে দায়িত্ব হস্তান্তরের পূর্বে পদোন্নতির প্রস্তাব পাঠিয়েছেন শামীম আখতার।

আর তিনি এ প্রস্তাব পাঠাতে প্রকৌশলী মো. জাহাঙ্গীর আলমের কাছ থেকে বিপুল টাকা ঘুস নিয়েছেন মর্মে গুন্জন চলছে।

তবে এসব বিষয়ে সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. শামীম আখতার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

এই বিষয়ে গণপূর্ত অধিদপ্তরের কয়েকজন প্রকৌশলী এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. শামীম আখতার তার যা ইচ্ছে হয়েছে তিনি তাই করেছে তিনি কোন নিয়মকানুন মেনে চলতেন না। সব সময় ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে গেছেন।

তবে মন্ত্রনালয় সূত্র এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, যদি কোন অনিয়ম পাওয়া যায় তাহলে আমরা ব্যবস্থা নিবো।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

বিপুল টাকার ঘুষ নিয়ে দায়িত্ব হস্তান্তরের পূর্বে অবৈধভাবে পদোন্নতির প্রস্তাব পাঠালেন শামীম আখতার!

আপডেট সময় : ১১:২৫:০৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫

গণপূর্ত ইএম অংশের তিনজন প্রকৌশলীকে অবৈধভাবে বিধিবহির্ভুত পদোন্নতির প্রস্তাব পাঠিয়েছেন সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. শামীম আখতার।

জানা যায়, গণপূর্ত ইএম উইংয়ে বিগত স্বৈরাচার সরকারের আমলে শেখ হেলাল এবং শেখ সেলিমের হস্তক্ষেপে এবং স্বয়ং শেখ হাসিনার মৌখিক আদেশে কোন প্রিলি কিংবা লিখিত পরীক্ষা ছাড়াই শুধুমাত্র ভাইভা পরীক্ষার মাধ্যমে উচ্চতর পদে নিয়োগ পান ছাত্রলীগের ১১ প্রকৌশলী। তাও আবার উচ্চতর ষষ্ঠ গ্রেডে।

এ নিয়োগের বিরুদ্ধে বিসিএস প্রকৌশলীগণ উচ্চতর আদালতে রীট পিটিশন মামলা করলে তাদেরকে প্রশাসনিকভাবে হয়রানি করা হয়।

এমনকি বিচারপতিদেরকে ফোন করে উচ্চতর পদে নিয়োগ দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন শেখ সেলিম। এক্ষেত্রে শেখ হাসিনার রেফারেন্স দেন তিনি।

অবশেষে দীর্ঘ শুনানি শেষে বিসিএসে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের পদ সংরক্ষণ করে উচ্চতর পদে নিয়োগের রায় দেন আদালত।

আদালতের সে রায়কেও বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে উচ্চতরপদে নিয়োগপ্রাপ্ত ছাত্রলীগের ১১ জনকে দেয়া হয় জেষ্ঠ্যতা। ফলে বিসিএস কর্মকর্তাদের মধ্যে পুঞ্জীভূত ক্ষোভ মহীরুহ রূপ ধারণ করে।

স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর বিসিএস কর্মকর্তাগণ পুনরায় আদালতের দ্বারস্থ হন। উচ্চতর আদালতের শুনানি নানা অজুহাতে পিছিয়ে নিয়ে সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. শামীম আখতারকে ঘুষ দিয়ে গত ২৬ অক্টোবর, ২৫ তারিখে ব্যাকডেটে সাইন দিয়ে পদোন্নতির প্রস্তাব তারা হাতে হাতে নিয়ে যায় ২৮ অক্টোবর ,২৫ তারিখে।গত ২৮ অক্টোবর,২৫ তারিখ দায়িত্ব হস্তান্তরের ১ ঘন্টা পূর্বে তিনি এই ফাইল ব্যাকডেটে সাইন করেন।

চাকরিবিধির জেষ্ঠ্যতা বিধিমালার বিধি ৮ এর উপবিধি ২ অনুযায়ী কোন কর্মকর্তা সিনিয়র স্কেল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হলে এবং বিভাগীয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হলে কিংবা অকৃতকার্য হলে তিনি সর্বোচ্চ ৪৩০০০-৬৯৫০০/- টাকার বেতন স্কেল তথা পঞ্চম গ্রেডে উত্তীর্ণ হতে পারবেন। কিন্তু এরপরে তিনি কোন উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্য হবেন না।

রীতিমত সরকারি এই চাকরিবিধি ভঙ্গ করে এবং আদালতে বিচারাধীন বিষয়ে আদালতের মতামতকে থোড়াই কেয়ার করে ঘুষ গ্রহণের মাধ্যমে দায়িত্ব হস্তান্তরের পূর্বে পদোন্নতির প্রস্তাব পাঠিয়েছেন শামীম আখতার।

আর তিনি এ প্রস্তাব পাঠাতে প্রকৌশলী মো. জাহাঙ্গীর আলমের কাছ থেকে বিপুল টাকা ঘুস নিয়েছেন মর্মে গুন্জন চলছে।

তবে এসব বিষয়ে সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. শামীম আখতার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

এই বিষয়ে গণপূর্ত অধিদপ্তরের কয়েকজন প্রকৌশলী এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. শামীম আখতার তার যা ইচ্ছে হয়েছে তিনি তাই করেছে তিনি কোন নিয়মকানুন মেনে চলতেন না। সব সময় ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে গেছেন।

তবে মন্ত্রনালয় সূত্র এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, যদি কোন অনিয়ম পাওয়া যায় তাহলে আমরা ব্যবস্থা নিবো।