খুলনায় এমইউজের ভোটবিহীন বিতর্কিত কমিটি
- আপডেট সময় : ০৮:৫৯:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫ ৪৭৭ বার পড়া হয়েছে
বিতর্কিত কর্মকাণ্ড, মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া এবং ভোটবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠন করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন (এমইউজে) খুলনা । অভিযোগ উঠেছে, এই নির্বাচনে জামায়েত সমর্থিত প্যানেলের কাছে বিএনপি সমর্থিত প্যানেলের ধরাশায়ী হওয়ার নেপথ্যে কাজ করেছে কিছু চরিত্রহীন বিএনপি নেতার একক ব্যক্তি স্বার্থ ও গোপন আঁতাত। সাংবাদিক সমাজের এই প্রাচীন প্ল্যাটফর্মে এমন নজিরবিহীন ঘটনাকে কলঙ্ক অধ্যায় হিসেবে দেখছেন সাবেক ও বর্তমান নেতারা।
- ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের ‘নিশিরাতের ভোটের’ সঙ্গে তুলনা
- বিএনপির চরিত্রহীন নেতাদের জামায়েতের সাথে যোগসাজশ
এমইউজে ঐতিহ্যগতভাবে বিএনপি ও জামাতের একটি যৌথ সাংবাদিক সংগঠন হিসেবে পরিচিত। এতদিন পর্যন্ত বিএনপি-সমর্থিত প্যানেলই এখানে এগিয়ে থাকত। তবে এবার ব্যতিক্রম ঘটেছে। সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে অভিযোগ করেন যে, এই ভরাডুবির প্রধান কারণ হলো নাম মাত্র বিএনপি-এর দুই-তিনজন নেতা গোপনে জামাতের সাথে যোগাযোগ করে এই ভোটবিহীন কমিটিতে অংশ নিয়েছেন। অভিযোগকারী নেতৃবৃন্দের মতে, কিছু চরিত্রহীন ও একক ব্যক্তি স্বার্থে অন্ধ বিএনপি নেতার কারণে দলের সমর্থিত প্যানেলের পরাজয় ঘটেছে।
এ বিষয়ে মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন (এমইউজে) খুলনার সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাসান আহমেদ মোল্লা বলেন, গত বছর যখন জামায়েত এককভাবে নির্বাচন করতে গিয়েছিল, তখন বিএনপি-পন্থী সাংবাদিকরাই বিভাগীয় শ্রম পরিচালক দপ্তরে অভিযোগ করে নির্বাচন বন্ধ করে দিয়েছিল। অথচ এবার সেই বিএনপি এর নেতাদের একাংশই জামায়েতের সাথে যোগসাজশে ভোটবিহীন কমিটিতে অংশ নিয়ে নিজের দলের প্যানেলকে ধরাশায়ী করতে সাহায্য করেছেন। একই সাথে তারা আইন অমান্য করেছে। আমরা বেআইনী কার্যক্রম সমর্থন করি না। তারা অবৈধ কমিটি গঠন করেছে।
বর্তমান ভোটবিহীন নির্বাচিত কমিটি নিয়ে সাবেক ও বর্তমান সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ ও মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তারা এই নির্বাচন প্রক্রিয়াকে গণতন্ত্রের পরিপন্থী ও সাংবাদিক সমাজের নীতির সম্পূর্ণ পরিপন্থী বলে দাবি করেছেন।
এমইউজের সাবেক নির্বাহী সদস্য খলিলুর রহমান সুমন কথিত কমিটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, কখন কবে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে আমি নিজেও জানি না। তিনি বর্তমান প্রক্রিয়াকে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের নিশিরাতের ভোটের সঙ্গে তুলনা করে বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ নিশিরাতে ভোট দিয়ে নির্বাচন করলেও এবারের এমইউজে নির্বাচন হয়েছে ভোটবিহীন নির্বাচন। তিনি আরও বলেন যেখানে সাংবাদিকরা সব সময় সমাজের অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে নিউজ করে থাকে, সেখানে আজ সাংবাদিকরাই অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে ভোটবিহীন নির্বাচিত হয়েছে। যা আমাদের সাংবাদিক সমাজের জন্য এক কলঙ্ক অধ্যায়।
এ ব্যাপারে সংগঠনের সিনিয়র সদস্য এইচ এম শামিমুজ্জামান বলেন, সমাজের অনিয়ম নিয়ে কাজ করা এই পেশাজীবী সংগঠনটির অভ্যন্তরীণ অনিয়ম এখন জনসম্মুখে আসায়, তা গোটা সাংবাদিক সমাজের ভাবমূর্তিকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। অবিলম্বে এই ভোটবিহীন কমিটি বাতিল করে স্বচ্ছ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
এ সময় তিনি আরো বলেন, বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। আদালতে নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন হতে পারে না। যারা এটি করেছেন তারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নন বলে তিনি মনে করেন। তিনি এ বিষয়ে প্রশাসনের প্রত্যেককে কামনা করেন।
এ বিষয়ে বিভাগীয় শ্রম অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো: শফিকুল ইসলাম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আদালতে বিচারাধীন বিষয় নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কোনভাবে নির্বাচন করা সম্ভব নয় এবং তিনি আরো বলেন যে বা যারা এই নির্বাচন করেছে তারা আইন অমান্য করেছে।









