০৪:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হচ্ছে না পদোন্নতি

দুর্নীতির কারণে গণপূর্তের কায়কোবাদের খুঁটির জোর ভেঙে যাচ্ছে!

নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা
  • আপডেট সময় : ০৭:৪৬:২২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর ২০২৫ ৩৯ বার পড়া হয়েছে

গণপূর্ত অধিদপ্তরের ইএম সার্কেল-২ এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. কায়কোবাদের কারণে গণপূর্তের ৩টি ডিভিশনের টেণ্ডার প্রক্রিয়া আটকে গেছে। তাছাড়া তার পদোন্নতি বিষয়টি নিয়েও এখন মন্ত্রনালয় বিষয় নজরে নিয়েছে। এক কথায় বলতে গেলে অনেকটাই আটকে গেছে তার ফাইল!

এদিকে তিনি অফিস না করে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী হতে দিনভর তদ্বির করে বেড়াচ্ছেন। ফলে দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা সচিবালয়, সুপ্রিম কোর্ট, ঢাকা ও মুগদা মেডিকেলের জরুরি নির্মাণ ও সংস্কার কাজ আটকে গেছে বলে শোনা গেছে।

গণপূর্ত সার্কেল-৩ এর অধীনে দেশের প্রশাসনের প্রাণ সচিবালয়, সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট, আইসিটিসহ ছাড়াও ঢাকা মেডিকেল ও মুগদা মেডিকেলসহ জরুরি স্থাপনার কাজ আটকে আছে।

সাধারণত: কোন কাজের শুরুর মূল বিষয়টি হচ্ছে প্রাক্কলন পাস, টেন্ডার ও টেন্ডারের টেক অনুমোদন। এর মধ্যে প্রাক্কলন পাস ও টেক অনুমোদনের কাজ হচ্ছে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর কাছে।

মো. কায়কোবাদ অফিস না করায় এর আওতাধীন ৩টি বিভাগের সব কাজ স্থবির হয়ে আছে। মো. কায়কোবাদের সার্কেলের অধীনে ইএম ডিভিশন-৪, ইএম ডিভিশন-৫ ও ইএম ডিভিশন-৬ কাজ করে। যা ঢাকা মহানগরীর অর্ধেক জায়গাকে কাভার করে। যার মধ্যে রয়েছে এসব গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।

স্বৈরাচার সরকারের সুবিধাভোগী মো. কায়কোবাদ পদোন্নতি পেতে গত দুই মাস ধরে নানা চেষ্টা ও তদ্বির করে আসছেন। যার ফলে তিনি অফিস করছেন না। এবং অফিসের কাজ ফেলে রাখছেন। এরই মধ্যে নতুন টেন্ডার সিস্টেম অনুমোদন হওয়ায় সবকিছুই এলোমেলো হয়ে গেছে।

মো. কায়কোবাদের দুর্নীতির টাকার জোর এতোই বেশি যে, যেখানে নিয়ম রয়েছে কোনো কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিতে হলে পদোন্নতিযোগ্য একাধিক কর্মকর্তার নাম প্রস্তাব আকারে মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হয়।

গণপূর্ত অধিদপ্তর সেই নিয়ম না মেনে কায়কোবাদকে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী পদে পদোন্নতি দিতে শুধুমাত্র একটি নাম প্রস্তাব করেন। অথচ তাদের ব্যাচের অপর কর্মকর্তা ইএম সার্কেল-৩ এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মাহাবুবুল হক চৌধুরীর নাম পাঠানো হয়নি।

৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর বিএনপি সমর্থিত কর্মকর্তা হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেন মাহাবুবুল হক চৌধুরী। তাঁর নাম না পাঠানোর ষড়যন্ত্রের নেপথ্যে রয়েছেন ফ্যাসিস্ট আমলে গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পাওয়া মো. শামীম আখতার।

এদিকে এতোদিনেও পদোন্নতি না হওয়ার পেছনে মো. কায়কোবাদ দায়ী করছেন মাহাবুবুল হক চৌধুরীকে। তার ধারনা এ সম্পর্কিত রিপোর্টগুলো তিনিই করাচ্ছেন এবং বিভিন্ন জায়গায় চেষ্টা তদ্বির করে তার পদোন্নতি আটকে রেখেছেন।

তাঁর পদোন্নতি আটকাতে পারলে বিএনপি সমর্থক হওয়ায় মাহাবুবুল হক চৌধুরী হবেন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী। এ নিয়ে তাদের ব্যাচমেটদের মধ্যে চলছে অলিখিত দ্বন্ধ। একজন আরেকজনের মুখও দেখছেন না। কায়কোবাদ আবার মনে করেন ইএম জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আশরাফুল হকেরও এ ব্যাপাারে ইন্দন থাকতে পারে।

কারন, মাহাবুবুল হক চৌধুরী ও মো. আশরাফুল হক একই এলাকার বাসিন্দা এবং বুয়েটে এক সঙ্গে পড়াশোনা করেছেন। মো. কায়কোবাদ চুয়েটের হওয়ার কারণে তারা জোট বেধে মো. কায়কোবাদকে ঠেকাতে চাচ্ছেন।

এদিকে অভিযোগ উঠেছে আন্তর্জাতিক সংবাদ পত্র “টেলিগ্রাম ২৪.নেট”সহ (www.telegramnews24.net) বিভিন্ন গণমাধ্যমে রিপোর্ট প্রকাশ বন্ধ করতে নিয়োগ করা ঠিকাদার এ সব বিষয় বলে বেড়াচ্ছেন নানা জায়গায়।

এই বিষয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, কোন ব্যক্তির বিষয়ে যখন কোন দুর্নীতির প্রসঙ্গ আসে তখন সেই সময়ে উচিৎ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের তা তদন্ত করা। আর পদোন্নতি তো অনেক পরের বিষয়। তাছাড়া দুর্নীতি বিষয় দুদকের উচিৎ তার (প্রকৌশলী) বিষয়টি নজর দেওয়া। যারা দেশের টাকা লুটপাট করে তাদের আইনের আওতায় আনা অতি জরুরি।

এসব বিষয়ে গণপূর্ত মন্ত্রনালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, আপনাদের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশের পর বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। এখন পদোন্নতি তো অনেক পরের বিষয়। মনে হয় না তিনি পদোন্নতি পাবে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

হচ্ছে না পদোন্নতি

দুর্নীতির কারণে গণপূর্তের কায়কোবাদের খুঁটির জোর ভেঙে যাচ্ছে!

আপডেট সময় : ০৭:৪৬:২২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর ২০২৫

গণপূর্ত অধিদপ্তরের ইএম সার্কেল-২ এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. কায়কোবাদের কারণে গণপূর্তের ৩টি ডিভিশনের টেণ্ডার প্রক্রিয়া আটকে গেছে। তাছাড়া তার পদোন্নতি বিষয়টি নিয়েও এখন মন্ত্রনালয় বিষয় নজরে নিয়েছে। এক কথায় বলতে গেলে অনেকটাই আটকে গেছে তার ফাইল!

এদিকে তিনি অফিস না করে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী হতে দিনভর তদ্বির করে বেড়াচ্ছেন। ফলে দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা সচিবালয়, সুপ্রিম কোর্ট, ঢাকা ও মুগদা মেডিকেলের জরুরি নির্মাণ ও সংস্কার কাজ আটকে গেছে বলে শোনা গেছে।

গণপূর্ত সার্কেল-৩ এর অধীনে দেশের প্রশাসনের প্রাণ সচিবালয়, সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট, আইসিটিসহ ছাড়াও ঢাকা মেডিকেল ও মুগদা মেডিকেলসহ জরুরি স্থাপনার কাজ আটকে আছে।

সাধারণত: কোন কাজের শুরুর মূল বিষয়টি হচ্ছে প্রাক্কলন পাস, টেন্ডার ও টেন্ডারের টেক অনুমোদন। এর মধ্যে প্রাক্কলন পাস ও টেক অনুমোদনের কাজ হচ্ছে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর কাছে।

মো. কায়কোবাদ অফিস না করায় এর আওতাধীন ৩টি বিভাগের সব কাজ স্থবির হয়ে আছে। মো. কায়কোবাদের সার্কেলের অধীনে ইএম ডিভিশন-৪, ইএম ডিভিশন-৫ ও ইএম ডিভিশন-৬ কাজ করে। যা ঢাকা মহানগরীর অর্ধেক জায়গাকে কাভার করে। যার মধ্যে রয়েছে এসব গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।

স্বৈরাচার সরকারের সুবিধাভোগী মো. কায়কোবাদ পদোন্নতি পেতে গত দুই মাস ধরে নানা চেষ্টা ও তদ্বির করে আসছেন। যার ফলে তিনি অফিস করছেন না। এবং অফিসের কাজ ফেলে রাখছেন। এরই মধ্যে নতুন টেন্ডার সিস্টেম অনুমোদন হওয়ায় সবকিছুই এলোমেলো হয়ে গেছে।

মো. কায়কোবাদের দুর্নীতির টাকার জোর এতোই বেশি যে, যেখানে নিয়ম রয়েছে কোনো কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিতে হলে পদোন্নতিযোগ্য একাধিক কর্মকর্তার নাম প্রস্তাব আকারে মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হয়।

গণপূর্ত অধিদপ্তর সেই নিয়ম না মেনে কায়কোবাদকে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী পদে পদোন্নতি দিতে শুধুমাত্র একটি নাম প্রস্তাব করেন। অথচ তাদের ব্যাচের অপর কর্মকর্তা ইএম সার্কেল-৩ এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মাহাবুবুল হক চৌধুরীর নাম পাঠানো হয়নি।

৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর বিএনপি সমর্থিত কর্মকর্তা হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেন মাহাবুবুল হক চৌধুরী। তাঁর নাম না পাঠানোর ষড়যন্ত্রের নেপথ্যে রয়েছেন ফ্যাসিস্ট আমলে গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পাওয়া মো. শামীম আখতার।

এদিকে এতোদিনেও পদোন্নতি না হওয়ার পেছনে মো. কায়কোবাদ দায়ী করছেন মাহাবুবুল হক চৌধুরীকে। তার ধারনা এ সম্পর্কিত রিপোর্টগুলো তিনিই করাচ্ছেন এবং বিভিন্ন জায়গায় চেষ্টা তদ্বির করে তার পদোন্নতি আটকে রেখেছেন।

তাঁর পদোন্নতি আটকাতে পারলে বিএনপি সমর্থক হওয়ায় মাহাবুবুল হক চৌধুরী হবেন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী। এ নিয়ে তাদের ব্যাচমেটদের মধ্যে চলছে অলিখিত দ্বন্ধ। একজন আরেকজনের মুখও দেখছেন না। কায়কোবাদ আবার মনে করেন ইএম জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আশরাফুল হকেরও এ ব্যাপাারে ইন্দন থাকতে পারে।

কারন, মাহাবুবুল হক চৌধুরী ও মো. আশরাফুল হক একই এলাকার বাসিন্দা এবং বুয়েটে এক সঙ্গে পড়াশোনা করেছেন। মো. কায়কোবাদ চুয়েটের হওয়ার কারণে তারা জোট বেধে মো. কায়কোবাদকে ঠেকাতে চাচ্ছেন।

এদিকে অভিযোগ উঠেছে আন্তর্জাতিক সংবাদ পত্র “টেলিগ্রাম ২৪.নেট”সহ (www.telegramnews24.net) বিভিন্ন গণমাধ্যমে রিপোর্ট প্রকাশ বন্ধ করতে নিয়োগ করা ঠিকাদার এ সব বিষয় বলে বেড়াচ্ছেন নানা জায়গায়।

এই বিষয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, কোন ব্যক্তির বিষয়ে যখন কোন দুর্নীতির প্রসঙ্গ আসে তখন সেই সময়ে উচিৎ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের তা তদন্ত করা। আর পদোন্নতি তো অনেক পরের বিষয়। তাছাড়া দুর্নীতি বিষয় দুদকের উচিৎ তার (প্রকৌশলী) বিষয়টি নজর দেওয়া। যারা দেশের টাকা লুটপাট করে তাদের আইনের আওতায় আনা অতি জরুরি।

এসব বিষয়ে গণপূর্ত মন্ত্রনালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, আপনাদের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশের পর বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। এখন পদোন্নতি তো অনেক পরের বিষয়। মনে হয় না তিনি পদোন্নতি পাবে।